ডেঙ্গুজ্বর এর লক্ষণগুলি কী কী , ডেঙ্গু হলে কী করবেন

ডেঙ্গুজ্বর
ডেঙ্গুজ্বর  এর  মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের লম্বা হাতা, মোজা এবং জুতা পরতে হবে। জানালায় নেট ব্যবহার করা যায়। ডেঙ্গু রোগীকে সব সময় মশারির মধ্যে রাখতে হবে

 

সারা দেশে ডেঙ্গুজ্বর  এর সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে এবং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে। সাধারণত ডেঙ্গু বর্ষার রোগ হলেও এখন শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটছে।

গত কয়েক দিনে ঢাকাসহ সারাদেশে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাড়িঘর, আঙিনাসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যা এডিস মশার বংশবৃদ্ধির উপযুক্ত পরিবেশ। তাই বর্ষাকালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। সকলের সচেতনতা, সকলের সহযোগিতা ও সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবেলা করতে হবে।

 

 

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলি কী কী: ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত 2 প্রকারের হয় – ক্লাসিক্যাল এবং হেমোরেজিক এবং ডেঙ্গু যখন তীব্র হয় তখন তাকে ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’ বলে। এবার জেনে নেওয়া যাক লক্ষণগুলো-

১। ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গুজ্বর : সাধারণত, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে উচ্চ জ্বর (100-104 ডিগ্রি পর্যন্ত) এবং তীব্র মাথাব্যথা হয়। অনেক সময় ঘামের পর জ্বর ফিরে আসতে পারে। এ ছাড়া পেশিতে ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হয়। অত্যধিক ক্লান্তি এবং ক্ষুধা হ্রাস। জ্বরের ৪-৫ দিনের মধ্যে শরীরে লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

২। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর : ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরের রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যার কারণে রক্তের প্লাটিলেট কমে যায় এবং যার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ​​পড়তে পারে যেমন নাক, মুখ, মাড়ি, ত্বকের নিচে রক্ত ​​পড়া, হেমোপটাইসিস, প্রস্রাবে রক্ত ​​পড়া। . অনেক সময় বুকে ও পিঠে পানি এসে লিভার আক্রান্ত হয়ে জন্ডিসের মতো জটিলতা সৃষ্টি করে।

ডেঙ্গু শক সিনড্রোম: ডেঙ্গু জ্বরের সবচেয়ে খারাপ রূপ হল ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’। রোগীর হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, ঠান্ডা লাগা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, দ্রুত স্পন্দন এবং চেতনা হারানো অনুভব করে। এই ক্ষেত্রে, রোগীর মৃত্যু হতে পারে। ডেঙ্গুজ্বর

ডেঙ্গু শক সিনড্রোম: ডেঙ্গু জ্বরের সবচেয়ে খারাপ রূপ হল ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’। রোগীর হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, ঠান্ডা লাগা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, দ্রুত স্পন্দন এবং চেতনা হারানো অনুভব করে। এই ক্ষেত্রে, রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

ডেঙ্গু হলে করণীয়: ডেঙ্গু জ্বরের কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া উপায়ে ডেঙ্গু জ্বর নিরাময় করা যায়। বাচ্চাদের ওরাল প্যারাসিটামল ও সিরাপ দিতে হবে, পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাওয়াতে হবে। যেমন লেবুর শরবত, ফলের রস, ডাবের পানি খেতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

প্লাটিলেট বাড়ায় এমন খাবার যেমন বাদাম, দই, গ্রিন টি, ব্রকলি, পালং শাক, বেদানা খেতে হবে। যাইহোক, যদি উপরের সতর্কতা লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি দেখা দেয় তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

ডেঙ্গু থেকে প্রতিকার: মশার বিস্তার রোধে বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেওয়া এবং বাড়ির আশপাশ যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখতে হবে। ফুলের টব, ফুলদানি, পরিত্যক্ত গাড়ির টায়ার পরিষ্কার করতে হবে, অব্যবহৃত পাত্র ও টিন সরিয়ে ফেলতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি টেনে ঘুমাতে হবে। তবে মশার কয়েল, স্প্রে অথবা মশা নিরোধক কেমিক্যাল ব্যবহার করা যেতে পারে। মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে বাচ্চাদের ফুলহাতা জামা, মোজা এবং জুতা পরাতে হবে। জানালায় নেট ব্যবহার করা যেতে পারে। ডেঙ্গু রোগীকে সবসময় মশারির ভিতরে রাখতে হবে, যাতে রোগীকে কোনো মশা কামড়াতে না পারে। তাই ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলা না করে এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গুজ্বর

ডা. আরিফ মাহমুদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ডিরেক্টর, মেডিক্যাল সার্ভিসেস এভারকেয়ার হসপিটালস, বাংলাদেশ।

 

আরো পড়ুন : মডেলদের দিয়ে অনৈতিক কাজ, বলিউড অভিনেত্রী গ্রেপ্তার

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *