অসুস্থ স্বজনহীন হাসপাতালে নিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পুলিশ কনস্টেবল শওকত হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সিএমপির বন্দর বিভাগের উপ-কমিশনার শাকিলা সোলতানা ১৬ এপ্রিল তার বরখাস্তের আদেশে স্বাক্ষর করেন। আদেশের একটি অনুলিপি সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রাইয়ের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, ‘৭১ দিন কাজে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া আসামি (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যায় ভুগছেন এবং নিঃস্ব মানুষের জন্য মানবিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
২০১৯ সালে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের নির্দেশে মানবিক পুলিশ ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়। এরপর কমিশনারও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা দেন।
দুস্থদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের মাধ্যমে ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করায় পুলিশের এই উদ্যোগ গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা শওকত হোসেন ২০০৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে তাকে ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটিতে বদলি করা হয়। সেখান থেকে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে আসেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি তিন বছরের ডিপ্লোমা ও দুই বছরের প্যারামেডিক্যাল কোর্স সম্পন্ন করেন।
২০১১ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রাম শহরের অসহায়, নিঃস্ব ও উত্তরাধিকারসূত্রে ছিন্নমূল মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করেন। হাসপাতালের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পর তিনি মহানগরে ঘুরে বেড়াতেন অসহায়, নামহীন অসুস্থ মানুষের সেবা ও ওষুধ সংগ্রহ করতে। ধীরে ধীরে, বেশ কয়েকজন কনস্টেবল তার সাথে স্বেচ্ছায় কাজ করে এবং এই কাজে যুক্ত হন।
19 ফেব্রুয়ারি, 2021 তারিখে, শওকত ডাবলমুরিং থানা এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হয়েছিলেন এবং একটি ‘বিতর্কিত’ বক্তৃতা দেন। ওই বক্তব্যের কারণে পরে তাকে দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করে কর্ণফুলী থানায় পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’ আঘাত হানতে পারে মে মাসে
